Belief

শরণার্থী আবেদন করা ব্যক্তিকে ইউরোপে ঢোকার আগেই ব্যবস্থা নিতে হবে: ইইউ

বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি বলেছেন, অভিবাসন নিয়ে ইউরোপে একটি নতুন নীতিমালা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অভিবাসীদের আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে এই নীতিমালা কার্যকর হবে। সেটির ব্যাপক প্রভাব বাংলাদেশে পড়বে।

তিনি বলেন, এই নীতিমালা ইউরোপে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য প্রচলন করা হয়েছে। ফলে ইউরোপে অভিবাসীদের আশ্রয় চাওয়ার প্রেক্ষাপট পাল্টে যাবে। এটি ইইউ সদস্য দেশগুলোর সহযোগিতায় বাস্তবায়ন করা হবে।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) ইউরোপ দিবস উপলক্ষে রাজধানীর এক‌টি হো‌টে‌লে আয়োজিত সংবাদ স‌ম্মেল‌নে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্য রাষ্ট্রদূতরা উপস্থিত ছিলেন। তারা স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরিতে সহযোগিতা করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

চার্লস হোয়াইটলি বলেন, বাংলাদেশ-ইইউ সম্পর্ক ইতিবাচক ধারায় আছে। বাংলাদেশ ও আমাদের সম্পর্ক এতটাই পরিপক্ব হয়েছে যে এখন আমরা রাজনৈতিক ইস্যু, আঞ্চলিক ইস্যু, জাতীয় ইস্যু ও অভিবাসনের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে কাজ করছি। গত বছর গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে জ্বালানি খাতে ৩৫০ মিলিয়ন ইউরোর একটি ঋণসহায়তা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে। এটি একটি যাত্রা শুরু মাত্র। এই চুক্তি বাংলাদেশকে ক্লিন এনার্জি ট্রানজিশনে সহায়তা করবে। গ্লোবাল গেটওয়ে উদ্যোগের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে ইইউ কাজ করছে।

প্রসঙ্গত, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রস্তাবিত নীতি যেটি গত এপ্রিলে ইউরোপীয় সংসদে পাস হয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে, ইউরোপের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত ইতালি, গ্রিস, স্পেনের মতো দেশগুলোয় প্রবেশ করা শরণার্থীদের অন্য দেশগুলো হয় ভাগ করে নিতে হবে, অথবা সেসব শরণার্থীর ব্যয় নির্বাহের জন্য তহবিলের ব্যবস্থা করতে হবে। অর্থাৎ শরণার্থী বিষয়ক দায় শুধু আর এই কয়েকটি দেশের ঘাড়ে থাকবে না। ইইউভুক্ত ২৭টি দেশকেই এ দায় নিতে হবে।

একই সঙ্গে বলা হয়েছে, শরণার্থী হিসেবে গ্রহণের সুযোগ কম—এমন ব্যক্তিদের বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে শরণার্থী হতে আবেদন করা ব্যক্তিকে এমনকি ইউরোপে প্রবেশের আগেই ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি যেকোনও আশ্রয়ের আবেদন ১২ সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। আবেদন বাতিল হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে একই সময়ের মধ্যে জোর করে তার নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে হবে।

২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে বর্তমান সরকার যে পরিকল্পনা করেছে, তা বাস্তবায়ন করতে সহযোগিতা করবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ২৭ দেশের জোটটি বাংলাদেশের যোগাযোগ, বাণিজ্য, জলবায়ু, ডিজিটাল অর্থনীতি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, অভিবাসন এবং রোহিঙ্গা সংকট ইস্যুতে সহযোগিতা করতে চায়।

ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, গত বছর আমরা সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন করেছি। এই বছর আমাদের সম্পর্কের অনেক কর্মকাণ্ড হবে। আমাদের দুই পক্ষের সম্পর্ক এখন রাজনৈতিক পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। আমরা অংশীদারত্ব সহযোগিতা চুক্তি (পিসিএ) করতে সম্মত হয়েছি।

গত অক্টোবরে ব্রাসেলসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন জানিয়ে হোয়াইটলি বলেন, ওই সময় ইইউ বাংলাদেশকে অনুদানসহ ঋণ দিয়েছে। আমরা আমাদের সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে চাই। টেলেন্ট অভিবাসন কর্মসূচির মাধ্যমে ইইউ বাংলাদেশ থেকে বৈধ পথে কর্মী নিতে চায় এবং অবৈধ অভিবাসনকে নিরুৎসাহিত করতে চায়।

অনুষ্ঠানে জার্মানির রাষ্ট্রদূত বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি এগিয়ে নিতে জার্মানি বাংলাদেশকে সবুজ জ্বালানি খাতে সহযোগিতা করতে চায়। এই ইস্যুতে আমরা কারিগরি সহযোগিতা করবো।

ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত বলেন, আমরা বাণিজ্য ইস্যুতে সহযোগিতা করতে চাই। শিশু শ্রম বন্ধে সহযোগিতা করতে চাই। আমরা চাই যে বাণিজ্য খাতে আন্তর্জাতিক যে ৩২টি কনভেনশন আছে, তার সব কটিতে বাংলাদেশ স্বাক্ষর করুক, যাতে ২০৩২ সালে ইইউ বাজারে জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে সহজ হয়।

স্পেনের রাষ্ট্রদূত বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে এই দেশের সরকার যে পথপরিকল্পনা করেছে, তা সফল করতে আমরা সহযোগিতা করবো। আমরা ডিজিটাল অর্থনীতিতে সহযোগিতা করবো।

ইতালির রাষ্ট্রদূত বলেন, আমরা অভিবাসন খাতে সহযোগিতা করতে চাই। আমরা বৈধ পথে অভিবাসন চাই। অবৈধ উপায়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ যাত্রায় আমরা মৃত্যু দেখতে চাই না।

নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আমরা সহযোগিতা করতে চাই। নিরাপদে, স্বেচ্ছায় ও পূর্ণ নাগরিক মর্যাদায় নিজেদের বাসভূমি মিয়ানমারে ফিরে যাওয়াই এই সংকটের একমাত্র সমাধান।

এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতি মোকাবিলায় সহযোগিতা করবেন জানিয়েছেন সুইডেনের রাষ্ট্রদূত।




Source link

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

You cannot copy content of this page

en_GBEnglish